বিদেশ মুখী মেধাবীদের দেশে ফিরেয়ে আনতে কিছু ভাবনা



  • বিদেশমুখী মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কিছু ভাবনা অতীব জরুরী

    হাসিনা আকতার নিগার
    লেখক- কলামিস্ট

    আগামী প্রজন্মের হাতে একটি উন্নয়নমুখী বাংলাদেশ উপহার দিতে হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। আর সেজন্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে সরকারী এবং বেসরকারী উদ্যোগে।

    দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় একমুখী শিক্ষা পদ্ধতি না থাকার কারনে সৃষ্টি হচ্ছে নানা জটিলতা। সমাজের উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেনী তাদের সন্তানদের চেষ্টা করে ইংরেজী মাধ্যমে পড়াশোনা করাতে । এর কারন হলো এ মাধ্যম বর্তমান বিশ্বে সকল দেশে গ্রহনযোগ্য শিক্ষা পদ্ধতি ।এ মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাবার সুযোগ সুবিধা ও সম্ভাবনা বেশী ।

    আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসছে বিগত কয়েক বছর যাবত।যার ফল হিসাবে শিক্ষার গুনগতমান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের কাছে। প্রকৃতভাবে এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার হার বাড়ানোর চেয়ে শিক্ষার মানের দিকে দৃষ্টি দেয়া অতীব জরুরী হয়ে পড়ছে।

    প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে শংকা। ফলশ্রুতিতে ইংরেজি মাধ্যমের তরুন মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হয়ে পড়ছে বিশেষ করে । আর সে কারনে পরিবারিকভাবে অর্থ যোগাড় করে বা নিজেদের মেধা দিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করে উন্নত শিক্ষালাভের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলে যায়। বর্তমানে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকাতে এ ধরনের শিক্ষার্থীর পরিমান অনেক। এখানে যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় তা হলো এসব দেশের বিশববিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজী মাধ্যমের ছেলে মেয়েরা সুযোগ গ্রহন করতে পারে বেশী। যেহেতু তাদের ও- লেবেল এবং এ - লেবেল পরীক্ষা হয় আর্ন্তজাতিকমানে। এবং তাদের পরীক্ষার ফলাফল উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাচাই বাচাই করতে পারে সহজে।

    তবে দুঃখের বিষয় হলো যে, বিদেশে অধ্যয়নে আগ্রহী বা অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারী বা বেসরকারী পর্যায়ে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা প্রদানের কোন ব্যবস্থা আমাদের দেশে নাই। যা বিশ্বের অনেক দেশে আছে । এমন কি উন্নত বিশ্বের দেশ ছাড়া ও মালেশিয়া, ভারতে সে দেশের শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়াশোনার জন্য বৃত্তি ও ব্যাংক ঋনের সুবিধা রয়েছে। যা তার শিক্ষাজীবন শেষে কর্ম জীবনে গিয়ে পরিশোধ করে কিস্তিতে । যদিও ইদানিং বেসরকারি কিছু ব্যাংক অভিভাবকদের লেনদেন বিবেচনা করে লোন দিয়ে থাকে। সেখানে শিক্ষার্থীর মেধা অবস্থান মুখ্য বিষয় নয়। আর এটা সবার পক্ষে নেয়া সম্ভব হয় না। তাই অনেক ক্ষেত্রে মা বাবা নিজের সবটুকু সম্বল দিয়ে সন্তানকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠায়। ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়ার পাশাপাশি কাজ করে।এতে করে পড়াশোনা শেষে বিদেশে নিশ্চিত ভবিষ্যৎ পায় বলে দেশে ফিরে আসে না তারা । এভাবেই দেশের মেধা দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে বিদেশে।
    কিন্তু দেশের উন্নয়নকে গতিশীল করতে হলে বিদেশে পড়াশোনা করা ছেলে মেয়েদেরকে দেশমুখী করার জন্য সরকারকে অবশ্যই উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। সরকারি বেসরকারিভাবে উচ্চ শিক্ষার জন্য মেধাভিত্তিক বৃত্তি ও লোন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ কাজটি করার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাপনাতে কিছু উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।

    মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতিতে বৃটিশ কাউন্সিল এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাজ করে তাদের সাথে সমনয় সাধন করে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেখা যায় দেশের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষার্থীদের বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করা সুযোগসহ নানাবিধ ব্যবস্থা করে দেয় । এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করে দেশের ছাত্রদের বিদেশে পড়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।তবে এ প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে কোন সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে না।

    বিদেশের স্কলারশিপের ক্ষেত্রে বহিঃ বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলো শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে তাদের নীতিমালা অনুসরন করে।এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারও বিদেশে অধ্যয়ন ইচ্ছুক বা অধ্যয়ন রত ছাত্রছাত্রীদের জন্য অন্যান্য দেশের মত নীতিমালাকে বিবেচনা করতে পারে। এখানে তারা যে ভাবে স্কলার শিপ প্রদান করে তাদের সাথে একই ভাবে সংযুক্ত হতে পারে।

    অন্যদিকে দেশে অধ্যয়নরত ছেলে মেয়েদেরকে তাদের পরীক্ষার ভালো ফলাফলের জন্য বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সরকার একটি নিদিষ্ট পরিমানের টাকা এককালিন বৃত্তি দেয় পুরুস্কার হিসাবে । যা পড়াশোনার ব্যয়ে কোন প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এ বৃত্তির ক্ষেত্রে যদি একজন ছাত্রের পড়াশোনা শেষ করা পর্যন্ত টিউশন ফিকে মানদন্ড ধরে প্রদান করা হয় তবে তা তার কাজে লাগবে অনেকাংশে ।

    বলা হয়ে থাকে দেশের মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে । কিন্ত প্রশ্ন হলো সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা কি বলতে পারবে দেশের কতজন মেধাবী ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়া শোন করছে। কিংবা তাদের সার্বিক অবস্থা কি? নাকি এ বিষয়গুলোকে জানার কোন প্রক্রিয়া দেশে আছে।

    দেশের মেধাকে দেশ কাজে লাগাতে হলে মেধাবী ছাত্রদের সহযোগীতা প্রদান করতে হবে। আর এ জন্য তাদেরকে সাবির্ক সহযোগিতা দিতে হবে। তবে এর পাশাপাশি তাদেরকে অবশ্যই পড়াশোন শেষে দেশে এসে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। এ দায়বদ্ধতা অবশ্যই থাকতে হবে বৃত্তি বা আর্থিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে। যে যে ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করবে তার জন্য সে ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে সরকার বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

    বিদেশে যে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে তা সরাসরি ছাত্রের টিউশন ফি খাতে জমা হয়ে যায় ইউনিভার্সিটিতে । দেশ থেকে প্রাপ্ত স্কলারশিপও একইভাবে প্রদান করা হলে নিয়মের ব্যতয় হবার সুযোগ নেই।

    বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্টুডেন্টদের যে ভাবে ব্যাংক ঋন দিয়ে থাকে দেশের ব্যাংকগুলো একই পদ্ধতি অনৃসরন করবে। সাধারণত বিদেশে অবস্থানরত ছাত্র ছাত্রীদের ষ্টুডেন্ট ফাইল করতে হয় ব্যাংকে। বিশ্ব বিদ্যালয়ের টিউশন ফিসহ আনুষঙ্গিক সকল কিছুর একটি হিসাব ব্যাংকে প্রদান করে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্টান। সে হিসাব অনুসরন করে যে সব ব্যাংক ষ্টুডেন্ট ফাইলের কাজ করে তারা ছাত্রদের লোন সুবিধা দিতে পারে। কারন সেসব ব্যাংক তাদের শিক্ষার সকল সনদপত্র গ্রহন করে নিয়ম অনুসারে। একই ভাবে এখানে অংগীকারনামা থাকবে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীর। অবশ্যই এর মনিটরিং করতে হবে যথাযথভাবে ব্যাংককে।

    এ প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা হয়তবা রয়েছে ব্যাংক সেক্টরে।এর পেছনে রয়েছে অনিয়ম আর দূর্নীতির কারন। কিন্তু আগামী প্রজন্মকে আমরা যদি সততা আর নিষ্ঠা সহকারে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করছি দেখাতে পারি তবে তারা অসততা শিখবে না। কারন বিদেশে পড়া ছেলেমেয়েরা দেশে থেকে গিয়ে যে জীবন দেখে তা তাদের চিন্তা চেতনা পরিবর্তন করে দেয় অনেকভাবে । যার কারনে দেশে এসে অনেক কিছুতে নিজেদের খাপ খাওয়াতে না পেরে হতাশ হয়ে বিদেশে চলে যেতে চায়।

    সরকারী- বেসরকারী খাতে মেধার বিকাশে আরও বেশী সুচিন্তিত ভাবে কাজ করতে হবে। ৫০০০ টাকা করে গড় হারে বৃত্তি দিয়ে শিক্ষাখাতে সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বলা হলেও ভাবা প্রয়োজন আসলে কি হচ্ছে।

    অনেক মেধাবী ছেলে মেয়ে শুধু মাত্র অর্থের কারনে নিজেকে আগামী দিনের জন্য তৈরী করতে পারছেনা। এ খাতে আলাদা একটি সেল গঠন করা যেতে পারে প্রধান মন্ত্রির কার্যালয়, শিক্ষা এবং বৈদিশিক মন্ত্রনালয়কে সংযুক্ত করে।

    বিদেশে সরকারীভাবে শুধুমাত্র শ্রমবাজার নিয়ে বৈঠক করার পাশাপাশি শিক্ষার প্রসারের আলোচনা এবং প্রস্তাবনা রাখা যেতে পারে উন্নত দেশগুলোর সরকার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে।

    সরকারীভাবে চিকিৎসা ও নানা কারনে জন্য যেমন আর্থিক সহায়তা দেয়া হয় তেমনি বিদেশে পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের সহায়তা দিলে তারাই হবে ভিশন ২০২১ এর অগ্রপথিক। কারন তথাকথিত রাজনীতির বাইরে তারা কাজ করবে তাদের মেধা আর অগ্রগামী চিন্তা চেতনা দিয়ে । ভুলে গেলে চলবে না অর্থনৈতিক মুক্তি না হলে এ স্বাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হবে না।আর তাই অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দেশের মেধাকে বিদেশেমুখী হতে দেয়া যাবে না।বরং দেশে এনে ব্যবহার করতে হবে শতভাগে।












    বিদেশমুখী মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কিছু ভাবনা অতীব জরুরী

    হাসিনা আকতার নিগার
    লেখক- কলামিস্ট

    আগামী প্রজন্মের হাতে একটি উন্নয়নমুখী বাংলাদেশ উপহার দিতে হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। আর সেজন্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে সরকারী এবং বেসরকারী উদ্যোগে।

    দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় একমুখী শিক্ষা পদ্ধতি না থাকার কারনে সৃষ্টি হচ্ছে নানা জটিলতা। সমাজের উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেনী তাদের সন্তানদের চেষ্টা করে ইংরেজী মাধ্যমে পড়াশোনা করাতে । এর কারন হলো এ মাধ্যম বর্তমান বিশ্বে সকল দেশে গ্রহনযোগ্য শিক্ষা পদ্ধতি ।এ মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাবার সুযোগ সুবিধা ও সম্ভাবনা বেশী ।

    আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসছে বিগত কয়েক বছর যাবত।যার ফল হিসাবে শিক্ষার গুনগতমান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের কাছে। প্রকৃতভাবে এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার হার বাড়ানোর চেয়ে শিক্ষার মানের দিকে দৃষ্টি দেয়া অতীব জরুরী হয়ে পড়ছে।

    প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে শংকা। ফলশ্রুতিতে ইংরেজি মাধ্যমের তরুন মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হয়ে পড়ছে বিশেষ করে । আর সে কারনে পরিবারিকভাবে অর্থ যোগাড় করে বা নিজেদের মেধা দিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করে উন্নত শিক্ষালাভের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলে যায়। বর্তমানে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকাতে এ ধরনের শিক্ষার্থীর পরিমান অনেক। এখানে যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় তা হলো এসব দেশের বিশববিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজী মাধ্যমের ছেলে মেয়েরা সুযোগ গ্রহন করতে পারে বেশী। যেহেতু তাদের ও- লেবেল এবং এ - লেবেল পরীক্ষা হয় আর্ন্তজাতিকমানে। এবং তাদের পরীক্ষার ফলাফল উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাচাই বাচাই করতে পারে সহজে।

    তবে দুঃখের বিষয় হলো যে, বিদেশে অধ্যয়নে আগ্রহী বা অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারী বা বেসরকারী পর্যায়ে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা প্রদানের কোন ব্যবস্থা আমাদের দেশে নাই। যা বিশ্বের অনেক দেশে আছে । এমন কি উন্নত বিশ্বের দেশ ছাড়া ও মালেশিয়া, ভারতে সে দেশের শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়াশোনার জন্য বৃত্তি ও ব্যাংক ঋনের সুবিধা রয়েছে। যা তার শিক্ষাজীবন শেষে কর্ম জীবনে গিয়ে পরিশোধ করে কিস্তিতে । যদিও ইদানিং বেসরকারি কিছু ব্যাংক অভিভাবকদের লেনদেন বিবেচনা করে লোন দিয়ে থাকে। সেখানে শিক্ষার্থীর মেধা অবস্থান মুখ্য বিষয় নয়। আর এটা সবার পক্ষে নেয়া সম্ভব হয় না। তাই অনেক ক্ষেত্রে মা বাবা নিজের সবটুকু সম্বল দিয়ে সন্তানকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠায়। ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়ার পাশাপাশি কাজ করে।এতে করে পড়াশোনা শেষে বিদেশে নিশ্চিত ভবিষ্যৎ পায় বলে দেশে ফিরে আসে না তারা । এভাবেই দেশের মেধা দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে বিদেশে।
    কিন্তু দেশের উন্নয়নকে গতিশীল করতে হলে বিদেশে পড়াশোনা করা ছেলে মেয়েদেরকে দেশমুখী করার জন্য সরকারকে অবশ্যই উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। সরকারি বেসরকারিভাবে উচ্চ শিক্ষার জন্য মেধাভিত্তিক বৃত্তি ও লোন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ কাজটি করার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাপনাতে কিছু উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।

    মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতিতে বৃটিশ কাউন্সিল এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাজ করে তাদের সাথে সমনয় সাধন করে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেখা যায় দেশের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষার্থীদের বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করা সুযোগসহ নানাবিধ ব্যবস্থা করে দেয় । এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করে দেশের ছাত্রদের বিদেশে পড়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।তবে এ প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে কোন সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে না।

    বিদেশের স্কলারশিপের ক্ষেত্রে বহিঃ বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলো শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে তাদের নীতিমালা অনুসরন করে।এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারও বিদেশে অধ্যয়ন ইচ্ছুক বা অধ্যয়ন রত ছাত্রছাত্রীদের জন্য অন্যান্য দেশের মত নীতিমালাকে বিবেচনা করতে পারে। এখানে তারা যে ভাবে স্কলার শিপ প্রদান করে তাদের সাথে একই ভাবে সংযুক্ত হতে পারে।

    অন্যদিকে দেশে অধ্যয়নরত ছেলে মেয়েদেরকে তাদের পরীক্ষার ভালো ফলাফলের জন্য বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সরকার একটি নিদিষ্ট পরিমানের টাকা এককালিন বৃত্তি দেয় পুরুস্কার হিসাবে । যা পড়াশোনার ব্যয়ে কোন প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এ বৃত্তির ক্ষেত্রে যদি একজন ছাত্রের পড়াশোনা শেষ করা পর্যন্ত টিউশন ফিকে মানদন্ড ধরে প্রদান করা হয় তবে তা তার কাজে লাগবে অনেকাংশে ।

    বলা হয়ে থাকে দেশের মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে । কিন্ত প্রশ্ন হলো সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা কি বলতে পারবে দেশের কতজন মেধাবী ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়া শোন করছে। কিংবা তাদের সার্বিক অবস্থা কি? নাকি এ বিষয়গুলোকে জানার কোন প্রক্রিয়া দেশে আছে।

    দেশের মেধাকে দেশ কাজে লাগাতে হলে মেধাবী ছাত্রদের সহযোগীতা প্রদান করতে হবে। আর এ জন্য তাদেরকে সাবির্ক সহযোগিতা দিতে হবে। তবে এর পাশাপাশি তাদেরকে অবশ্যই পড়াশোন শেষে দেশে এসে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। এ দায়বদ্ধতা অবশ্যই থাকতে হবে বৃত্তি বা আর্থিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে। যে যে ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করবে তার জন্য সে ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে সরকার বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

    বিদেশে যে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে তা সরাসরি ছাত্রের টিউশন ফি খাতে জমা হয়ে যায় ইউনিভার্সিটিতে । দেশ থেকে প্রাপ্ত স্কলারশিপও একইভাবে প্রদান করা হলে নিয়মের ব্যতয় হবার সুযোগ নেই।

    বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্টুডেন্টদের যে ভাবে ব্যাংক ঋন দিয়ে থাকে দেশের ব্যাংকগুলো একই পদ্ধতি অনৃসরন করবে। সাধারণত বিদেশে অবস্থানরত ছাত্র ছাত্রীদের ষ্টুডেন্ট ফাইল করতে হয় ব্যাংকে। বিশ্ব বিদ্যালয়ের টিউশন ফিসহ আনুষঙ্গিক সকল কিছুর একটি হিসাব ব্যাংকে প্রদান করে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্টান। সে হিসাব অনুসরন করে যে সব ব্যাংক ষ্টুডেন্ট ফাইলের কাজ করে তারা ছাত্রদের লোন সুবিধা দিতে পারে। কারন সেসব ব্যাংক তাদের শিক্ষার সকল সনদপত্র গ্রহন করে নিয়ম অনুসারে। একই ভাবে এখানে অংগীকারনামা থাকবে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীর। অবশ্যই এর মনিটরিং করতে হবে যথাযথভাবে ব্যাংককে।

    এ প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা হয়তবা রয়েছে ব্যাংক সেক্টরে।এর পেছনে রয়েছে অনিয়ম আর দূর্নীতির কারন। কিন্তু আগামী প্রজন্মকে আমরা যদি সততা আর নিষ্ঠা সহকারে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করছি দেখাতে পারি তবে তারা অসততা শিখবে না। কারন বিদেশে পড়া ছেলেমেয়েরা দেশে থেকে গিয়ে যে জীবন দেখে তা তাদের চিন্তা চেতনা পরিবর্তন করে দেয় অনেকভাবে । যার কারনে দেশে এসে অনেক কিছুতে নিজেদের খাপ খাওয়াতে না পেরে হতাশ হয়ে বিদেশে চলে যেতে চায়।

    সরকারী- বেসরকারী খাতে মেধার বিকাশে আরও বেশী সুচিন্তিত ভাবে কাজ করতে হবে। ৫০০০ টাকা করে গড় হারে বৃত্তি দিয়ে শিক্ষাখাতে সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বলা হলেও ভাবা প্রয়োজন আসলে কি হচ্ছে।

    অনেক মেধাবী ছেলে মেয়ে শুধু মাত্র অর্থের কারনে নিজেকে আগামী দিনের জন্য তৈরী করতে পারছেনা। এ খাতে আলাদা একটি সেল গঠন করা যেতে পারে প্রধান মন্ত্রির কার্যালয়, শিক্ষা এবং বৈদিশিক মন্ত্রনালয়কে সংযুক্ত করে।

    বিদেশে সরকারীভাবে শুধুমাত্র শ্রমবাজার নিয়ে বৈঠক করার পাশাপাশি শিক্ষার প্রসারের আলোচনা এবং প্রস্তাবনা রাখা যেতে পারে উন্নত দেশগুলোর সরকার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে।

    সরকারীভাবে চিকিৎসা ও নানা কারনে জন্য যেমন আর্থিক সহায়তা দেয়া হয় তেমনি বিদেশে পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের সহায়তা দিলে তারাই হবে ভিশন ২০২১ এর অগ্রপথিক। কারন তথাকথিত রাজনীতির বাইরে তারা কাজ করবে তাদের মেধা আর অগ্রগামী চিন্তা চেতনা দিয়ে । ভুলে গেলে চলবে না অর্থনৈতিক মুক্তি না হলে এ স্বাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হবে না।আর তাই অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দেশের মেধাকে বিদেশেমুখী হতে দেয়া যাবে না।বরং দেশে এনে ব্যবহার করতে হবে শতভাগে।


















Comments

2 comments
  • Bhabna Sen and Fatima Ahmed like this
  • Fatima Ahmed
    Fatima Ahmed This is very good topic to discuss. Very relevant in today;s work. Corruption is the main reason why so many people cannot adjust when they go back to their developing countries....
    December 4, 2018 - 1 likes this
  • Hasina Akhtar Nigar
    Hasina Akhtar Nigar yes . but bangladrsh lost their merit.
    December 8, 2018